First, fast, furious...Bangladeshi business blog

We provide
--social media strategies for Bangladeshi businesses worldwide
--public speaking on Bangladeshi businesses and social media
--paid product/service/website reviews of Bangladeshi companies

Interested to place an advertisement for your business?
Showing posts with label bangdesh. Show all posts
Showing posts with label bangdesh. Show all posts

Thursday, October 9, 2008

প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা

শিক্ষার অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। একটি সমাজের সামগ্রিক বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই প্রেক্ষিতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সরকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সনদে সাক্ষর করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার এই দীর্ঘ সময় অতীত হলেও আমরা একটি যুগপোযুগী জ্ঞান বিজ্ঞানভিত্তিক ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারিনি। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের হার বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু গুণগত মান বাড়ছে না। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কারনে আমরা এগুতে পারছিনা।

আমাদের দেশে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে সমাজের বিত্তবান জমিদার ও ব্যবসায়ী শ্রেণীর এক আলোকোজ্জ্বল অবদান ছিলো। যা আমাদের দেশে শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যাদের অবদানের কারনে অনেক স্কুল হয়েছে। তা ধারাবাহিকভাবে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয়েছে। তাদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ তারা এখনো অমর হয়ে আছেন। আমাদের দেশের জমিদার ও বিত্তবান শ্রেণীর শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের উদাহরণ প্রচুর। এর মধ্যে উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, মানিকগঞ্জের জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর কথা। তিনি তার পিতার নামে ১৮৬৩ সালে জগন্নাথ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। যা এখনকার বিখ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রখ্যাত দীন নাথ সেন ১৮৭০ এর দিকে ঢাকাতে প্রথম মেয়েদের জন্য ইডেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ১৯২৬ সালে ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ও ইব্রাহীম খাঁ প্রতিষ্ঠা করেন সাদত কলেজ। ওয়াজেদ আলী খান পন্নী তার জমিদারীর সম্পূর্ণ অংশ ওয়াক্ফ করে দেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্য। এরকম আরো অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। আমাদের নোয়াখালীতেও বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই প্রতিষ্ঠা করেছেন সমাজের শিক্ষানুরাগী বিত্তবান কিছু মানুষ। বিশেষত শিক্ষানুরাগী কিছু জমিদার। এভাবে তাকালে দেখা যায় যে এদেশে শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে সমাজের ব্যবসায়ী ও বিত্তবান কিছু সংখ্যক মানুষ। যতদিন সাধারণ মানুষসহ বিত্তবান মানুষেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো, ততদিন আমাদের শিক্ষার মানও অনেক উন্নত ছিলো। আজ সেই জমিদারী প্রথা নেই। কিন্তু বিত্তবান শ্রেণী আছে। কিন্তু যে সামাজিক দায়বদ্ধতা আগে ছিলো, বর্তমানে তা আর লক্ষ্য করা যায় না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের অবদান কমে যাচ্ছে, শিক্ষার মানও কমছে।

৮০-এর দশক থেকে এ দেশে কর্পোরেট সেক্টর ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। আমাদের দেশে কর্পোরেট সেক্টরের ব্যপ্তি বর্তমানে বিশাল আকার ধারণ করেছে। মুনাফার পরিমান বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমানে। কিন্তু সে হারে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালনের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়নি। আগেকার সমাজে বিত্তবান সম্প্রদায়ের সম্পদের তুলোনায় সামাজিক অবদান যতোটা ছিলো, বর্তমানে মুনাফা ও সম্পদের পরিমান বাড়লেও সামাজিক অবদান ঐ হারে বাড়েনি বলা যায়। আমাদের বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে তাদের লভ্যাংশের কিছু অংশ ক্রীড়া, স্বাস্থ্যসেবা এবং সাংস্কৃতিক খাতসহ জনসেবামূলক কাজের জন্য ব্যয় করছে। তবে শিক্ষাখাতে তাদের অবদান এখনো সে তুলোনায় কম।

সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা জনগণের দীর্ঘদিনের দাবী হলে ও বাংলাদেশ সরকার এই ক্ষেত্রে এখন ও সফল হতে পারেনি। এখনও ৫০,০০০ গ্রামে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এর মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত কিছু স্কুল রয়েছে, যা যথেষ্ট নয়। দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে যুগোপোযুগী শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। দেশ ও জাতি গঠনে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত জন্য সরকার ও জনগণকে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সেই উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে চায়। কোম্পানী/ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে অবদান রাখার জন্য আগ্রহী করা যায় তাহলে সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।